অবিকৃত গ্রন্থ আল-কোরআন
  • শিরোনাম: অবিকৃত গ্রন্থ আল-কোরআন
  • লেখক:
  • উৎস:
  • মুক্তির তারিখ: 14:21:20 3-9-1403

এ প্রবন্ধের উদ্দেশ্য হল শিয়া-সুন্নি উভয় মাজহাবের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কোরআন অবিকৃত থাকার সপক্ষে উপস্থাপিত প্রমাণসমূহ সম্পর্কে অবগতি, বাহ্যদৃষ্টিতে যে সকল হাদীস থেকে কোরআন বিকৃত হয়েছে বলে ধারণা করা হয় তার সমাধান ও ব্যাখ্যা, কোরআনের সমগ্র বাণী ও মূলপাঠ্য নির্ভরযোগ্য হওয়ার বিষয়টি প্রমাণের পদ্ধতি সম্পর্কিত পর্যালোচনা এবং কোরআনের বাণীর বাহ্যিক অর্থের প্রামাণ্যতার ক্ষেত্রে তার প্রভাব।

তাহরীফের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শব্দ পরিচিতি

তাহরীফ (বিকৃতি): আরবি تحريف শব্দটি ‘ح ر ف’ তিনটি মূল অক্ষরের সাথে অতিরিক্ত অক্ষর যুক্ত হয়ে উৎপত্তি লাভ করেছে আরবি ব্যাকরণের পরিভাষার ‘تحريف’ শব্দটি মাসদারে ছুলাছী মাজিদ ফি বা অতিরিক্ত অক্ষরযুক্ত একটি ক্রিয়ামূল যার অর্থ বক্র হওয়া, ঝুকে পড়া ও পরিবর্তিত হওয়া। (تحريف الكلام)-এর অর্থ কথা বা বাক্যের মধ্যে পরিবর্তন সাধন।

এ শব্দটি কিছু সংখ্যক হাদীসের পরিভাষায় কোরআনের আয়াতকে ভুল অর্থে গ্রহণ ও ব্যাখ্যা করা যা মনগড়া ব্যাখ্যা দানের সমার্থক অর্থ বহন করে।

(أقرا)-ইকরা শব্দটি (ق ر أ) অক্ষর তিনটির সাথে অতিরিক্ত অক্ষর সংযোজিত একটি ক্রিয়ামূল যার অর্থ সমবেত করা এবং কথা বলানো। যেমন ‘أقراه القرأن’ বাক্যের অর্থ তাকে কোরআন পঠন শিক্ষা দিয়েছে। কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার যুগে এবং এর পরবর্তী কিছু দিন পর্যন্ত ‘ইকরা’ শব্দটি পারিভাষিক অর্থে কোরআনের অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ উচ্চারণ পদ্ধতি শিক্ষা দান অর্থে ব্যবহৃত হত। এ জন্য মুকরী বা কোরআন শিক্ষাদাতা তাকেই বলা হত যে কোরআনের উচ্চারণ ও ব্যাখ্যা শিক্ষা দান করত।

‘তানযীল’ ‘ن ز ل’ শব্দমূলের সঙ্গে অতিরিক্ত শব্দ সংযোজিত একটি ক্রিয়ামূল যার অর্থ অবতীর্ণ করা। হাদীস শাস্ত্রের পরিভাষায় তানযীল (تنزيل) অর্থ কোরআনের মূলপাঠ্য ও বাণী এবং এর ব্যাখ্যা সম্বলিত কোন বিষয় ওহী হিসেবে অবতীর্ণ হওয়া।

নাসখুত তিলাওয়াত (পঠন রহিতকরণ): নাসখ শব্দের অর্থ অপসারণ, রহিতকরণ বা বিলুপ্ত ও অতিক্রান্ত হওয়া। কোরআন গবেষকদের নিকট পঠন রহিতকরণ পরিভাষাটি পঠন ব্যতীত নির্দেশ রহিতকরণের বিপরীতে ব্যবহৃত হয়। পঠন রহিতকরণ পরিভাষাটিকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে যথা নির্দেশ ব্যতীত পঠন রহিতকরণ ও নির্দেশসহ পঠন রহিতকরণ।

যেমন যখন কোন আয়াতের নির্দেশ ব্যতীত পঠন (তেলাওয়াত) রহিত হয় অর্থাৎ আয়াতে অবতীর্ণ নির্দেশ বহাল থাকে কিন্তু তার পঠন রহিত হয় তখন প্রথম প্রকারের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে এবং যখন কোন আয়াতের পঠনের সাথে নির্দেশও রহিত হয় তখন দ্বিতীয় পরিভাষাটি ব্যবহৃত হয়। আহলে সুন্নাতের কোরআন বিশেষজ্ঞদের লেখায় এই পরিভাষাগুলি ‘কোরআনের যে অংশ অবতীর্ণের পর উঠিয়ে নেয়া হয়েছে এবং কোরআনের পাণ্ডুলিপির অন্তর্ভুক্ত হয়নি’ শিরোনামে আনা হয়েছে ও প্রসিদ্ধি লাভ করেছে।

তাহরীফুল কালাম (কথার বিকৃতি) এবং কোরআনের বিকৃতিকে সামগ্রিকভাবে দু’ভাগে ভাগ করা যেতে পারে যথা অর্থগত বিকৃতি (তাহরীফে মানাভী) ও শব্দগত বিকৃতি (তাহরীফে লাফযি)। অর্থগত বিকৃতি বলতে বিকৃত অর্থে বাক্যকে গ্রহণ ও ব্যাখ্যা এবং বক্তার উদ্দেশ্যের বিপরীত ও পরিপন্থী অর্থে তা প্রয়োগকে বুঝায়। এ ধরনের বিকৃতি নিশ্চিতভাবে কোরআনের ক্ষেত্রে ঘটেছে।

হযরত আলী (আ.) তার সময়ে এমনটি ঘটেছে এবং ভবিষ্যতেও এরূপ ঘটবে বলে বলেছেন।১০ পবিত্র কোরআন পূর্ববর্তী ঐশী গ্রন্থসমূহের ক্ষেত্রে এরূপ ঘটেছে বলে বর্ণনা করেছে।১১ শব্দগত বিকৃতি হল আয়াত ও বাক্যে শব্দের বৃদ্ধি বা হ্রাস ঘটানো। বক্ষমান প্রবন্ধের বিষয়বস্তু হল দ্বিতীয় ধরনের বিকৃতি।

যে মুফাসসির ইজতিহাদী পদ্ধতিতে১২ কোরআনের শব্দমালা ও বাক্য থেকে মহান আল্লাহর উদ্দেশ্য ও তার অর্থ উদঘাটন করতে চান তাকে প্রথম পর্যায়ে একটি পূর্ব সিদ্ধান্তকে ধ্রুত ধরে নিতে হবে আর তা হল কোরআন অবিকৃত রয়েছে। কারণ কোরআন বিকৃতির বিষয়টিকে পূর্বসিদ্ধান্ত হিসেবে গ্রহণ করলে যে সকল শর্ত ও ইঙ্গিত কোরআনের অর্থ অনুধাবনে সরাসরি ভূমিকা রাখে তা গ্রহণযোগ্য বলে গণ্য হবে না। এ ক্ষেত্রে কোরআনের শব্দমালা ও বাক্য থেকে মহান আল্লাহর উদ্দেশ্য উদঘাটনের বিষয়টিও রহিত হয়ে যাবে। এ বিষয়টি পরিত্যক্ত ঘোষিত হলে তা থেকে কখনই একজন মুফাসসির (ব্যাখ্যাকারক) আল্লাহর প্রকৃত উদ্দেশ্য জানতে পারবেন না। শিয়া-সুন্নি উভয় মাজহাবের মুফাসসিরগণ তাদের কোরআন সম্পর্কিত আলোচনার প্রারম্ভে কোরআন অবিকৃত থাকার বিষয়টি উপস্থাপনের কারণটি এর মধ্যেই নিহিত।

কোরআন অবিকৃত থাকার সপক্ষে শিয়া-সুন্নি উভয় মাজহাবের উপস্থাপিত দলিলসমূহ

শিয়া-সুন্নি উভয় মাজহাবের আলেম ও মনীষীরা কোরআন অবিকৃত থাকার বিষয়টি প্রমাণের জন্য কোরআনের আয়াত, হাদীসসমূহ, ঐতিহাসিক সাক্ষ্য-প্রমাণ (কোরআনের সমগ্র অংশ মুখস্থ, লিখন, সংকলন ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে মুসলমানদের অতিরিক্ত গুরুত্ব দান ও সর্বাত্মক চেষ্টা) এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ইজমা (সর্বসম্মত মত) ও বুদ্ধিবৃত্তিক দলিলও উপস্থাপন করেছেন।

ক. কোরআনী দলিল: উভয় মাজহাবের মনীষীরা সুরা হিজরের নবম আয়াত-

إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ

অর্থাৎ নিশ্চয়ই আমরা স্বয়ং এই জিকর (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি এবং স্বয়ং আমরা তার সংরক্ষক।

এবং সূরা ফুসসিলাতের (হা মীম সিজদা) ৪১ ও ৪২ নং আয়াতকে

ان اللذين كفروا بالذكر لما جآءهم و إنه لكتاب عزيز لايٲتيه الباطل من بين يديه و لا من خلفه تنزيل من حكيم حميد۞لَا يَأْتِيهِ الْبَاطِلُ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَلَا مِنْ خَلْفِهِ تَنْزِيلٌ مِنْ حَكِيمٍ حَمِيدٍ

অর্থাৎ "নিশ্চয়ই যারা এই জিকরকে (স্মরণকারী অর্থাৎ কোরআন) অস্বীকার করেছিল যখন তা তাদের নিকট এসেছিল (জেনে রাখুক যে, আমরা তা অবগত) অথচ তা অপরাজেয় গ্রন্থ। কোন প্রকার মিথ্যা তার সম্মুখ হতে এবং এর পশ্চাৎ হতে তার নিকট আসতে পারবে না। (কারণ তা) পরম প্রজ্ঞাময়, মহা-প্রশংসনীয় সত্তার (আল্লাহর) নিকট হতে অবতীর্ণ হয়েছে।” কোরআন অবিকৃত থাকার সপক্ষে দলিল হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তাদের উপস্থাপিত প্রমাণের মধ্যে পদ্ধতিগত তেমন কোন পার্থক্য অনুভূত হয় না।১৩

সূরা হিজরের আয়াতটিতে কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার সময় এবং তা অবতীর্ণ হওয়ার পর যে, তাতে কোনরূপ বিকৃতি ঘটেনি ও অপরিবর্তিত অবস্থায় সংরক্ষিত হবে তা অকাট্য ভাষায় বর্ণিত হয়েছে। সূরা হা মীম সিজদার আয়াতে বর্ণিত অপরাজেয় (পরাত্রমশীলতা) ও মিথ্যার প্রবেশের অসম্ভবতা এ দু’টি বৈশিষ্ট্য থেকে কোরআন অবিকৃত থাকার প্রমাণ উপস্থাপিত হয়েছে।

ফখরুদ্দীন রাজী উপরিউক্ত দু’টি আয়াত প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপনের পর বলেনঃ

কাজী আবু বাকর বাকেলানী ইমামিয়া শিয়া সম্প্রদায়ের কোন কোন ব্যক্তির কোরআনে হ্রাস-বৃদ্ধি ও বিকৃতির বিশ্বাসকে খণ্ডনের জন্য সূরা হিজরের ‘নিশ্চয়ই আমরা স্বয়ং এ কোরআন অবতীর্ণ করেছি এবং স্বয়ং আমরা তার সংরক্ষক’ আয়াতটির উল্লেখ করে বলেছেন: "যদি এরূপ হয় তবে কোরআন সংরক্ষিত থাকতে পারে না।” কিন্তু এই প্রমাণটি দুর্বল বলে গণ্য যেহেতু কোরআন অবিকৃতির প্রমাণ স্বয়ং কোরআন থেকে আনা হয়েছে যা চক্রক প্রমাণ (Circler Proof)১৪ হিসেবে ভ্রান্ত পরিগণিত হবে। সুতরাং যেসকল শিয়া কোরআনে হ্রাস-বৃদ্ধি ও বিকৃতি ঘটেছে বলে বিশ্বাস করে সম্ভবতঃ তারা বিশ্বাস করে এই আয়াতটি ও কোরআনে সংযোজিত হয়েছে এবং এতে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত আয়াতসমূহের অন্যতম। এ জন্য তাদের মত খণ্ডনে এই আয়াতকে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা যায় না।১৫

দুঃখজনকভাবে ফখরুদ্দীন রাজী বিশিষ্ট শিয়া গবেষক ও লেখকদের গ্রন্থসমূহ অধ্যয়ন এবং এ বিষয়ে কোনরূপ চিন্তা ও গবেষণা ছাড়াই কাজী আবু বাকর বাকেলানীর অনুসরণে তাদের ওপর অপবাদ আরোপ করেছেন। কারণ কোন ইমামীয়া শিয়া (এমন কি ইসলামের কোন মাজহাব ও সম্প্রদায়ই) কোরআনে কোনরূপ বৃদ্ধি ঘটেছে বলে উল্লেখ করেনি বরং কোরআনে বিকৃতি ঘটেছে কি ঘটেনি এ বিষয়ক আলোচনা মূলতঃ কোরআনে হ্রাস ঘটেছে এ বিশ্বাসকে নিয়ে কেন্দ্রিভূত। ফখরুদ্দীন রাজী তার উপরিউক্ত কথার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে মনের অজান্তে কোরআন অবিকৃত থাকার সপক্ষে উক্ত আয়াতকে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টাকে পণ্ড করেছেন। কারণ তিনি তার উপস্থাপিত আপত্তির কোন উপযুক্ত জবাব না দিয়েই পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন। তিনি কোরআন সংরক্ষণের আয়াতটির (হিজর:৯) প্রমাণ উল্লেখ করে বলেছেনঃ "এই আয়াতটির উদ্দেশ্য হল ঐ কথা বলা যে, কোরআনকে বিকৃতি, হ্রাস ও বৃদ্ধি হতে রক্ষা করব যেমন আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন এতে সম্মুখ ও পশ্চাৎ থেকে কোন বিকৃতি (মিথ্যা) প্রবেশ করতে পারে না।১৬

কোরআনের যে কোন আয়াত থেকে অবিকৃতির দলিল উপস্থাপন করতে চাইলে কেবলমাত্র ঐ আয়াতটি অতিরিক্ত ও সংযোজিত হওয়ার সম্ভাবনাই অবিকৃতির দাবীকে নস্যাৎ করার জন্য যথেষ্ট যদিও এক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি বিকৃতির বিষয়টি বাস্তবে (ঘটেছে কি ঘটেনি তা) প্রমাণের উদ্দেশ্যে বলুক বা না বলুক। তাই ফখরে রাজীকে তার আলোচনায় অবশ্যই এই চক্রক প্রমাণকে খণ্ডন করতে হবে। কারণ শুধু এই আয়াত সংযোজিত হওয়ার সম্ভাবনাই চক্রের সমস্যা সৃষ্টি করেছে।

অবশ্য শিয়া-সুন্নি উভয় মাজহাবের আলেমদের দৃষ্টিতে কোরআন অবিকৃত থাকার দলিল অত্যন্ত দৃঢ় ও স্পষ্ট এবং যারা বিকৃতির ধারণায় বিশ্বাস করে তারা ঐ প্রমাণগুলি খণ্ডনে অক্ষম এবং এ ক্ষেত্রে তাদের আপত্তি অন্তঃসারশূন্য। ধরা যেতে পারে কোরআন বিকৃতির সপক্ষে উপস্থাপিত প্রমাণসমূহের (অপযুক্তিসমূহ) সমষ্টি হল মুহাদ্দিস নূরীর গ্রন্থ।১৭ এ জন্য তার আপত্তি সমূহ জবাবসহ যে সকল গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে তা অধ্যয়ন করুন।১৮

খ. ঐতিহাসিক প্রমাণ ও সাক্ষ্য: কোরআন বিকৃতি থেকে মুক্ত থাকার সপক্ষে অন্যতম প্রমাণ হিসেবে ঐতিহাসিক সাক্ষ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। শিয়া-সুন্নি উভয় মাজহাবের পক্ষ থেকে ঐতিহাসিক যে সাক্ষ্যসমূহ উপস্থাপিত হয়েছে তা মূলতঃ নিমোক্ত ভিত্তি ও যুক্তিসমূহের ওপর প্রতিষ্ঠিতঃ

১. কোনআন অবতীর্ণ হওয়ার সমকালীন আরবদের আশ্চর্যজনক মুখস্থ ক্ষমতা এবং কোরআনের অলৌকিক ছন্দ, সাহিত্যমান ও আলংকারিক সৌন্দর্য তাদেরকে এ গ্রন্থের প্রতি অবর্ণনীয় গুরুত্ব দানে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

২. মুসলমানদের কোরআনের প্রতি ভালবাসা, তা মুখস্থ করার আগ্রহ এবং সার্বক্ষণিক পাঠাভ্যাস।

৩. মুসলমানদের নিকট কোরআনের পবিত্রতার বিশ্বাস এবং কোরআনে ক্ষুদ্রতম পরিবর্তনের বিষয়ে ও তাদের স্পর্শকাতরতা (যেহেতু তারা এ বিষয়ে এতটা সংবেদনশীল ছিলেন সেহেতু কোরআনে যে কোন ধরনের বিকৃতির সম্ভাবনা দেখা দিলে নিঃসন্দেহে তারা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাতেন ও তার মোকাবেলায় কঠোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন অথচ এরূপ কোন প্রতিক্রিয়ার ঘটনা ইতিহাসে আসেনি যা এরূপ বিকৃতি ঘটাকে অসত্য প্রমাণ করে)।১৯

গ. হাদীসসমূহ: হাদীসসমূহ থেকে এ বিষয়ে প্রমাণ উপস্থাপনের ক্ষেত্রে শিয়া ও সুন্নি মনীষীদের মধ্যে পার্থক্য পরিদৃষ্ট হয়। শিয়া আলেমদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের হাদীস২০ থেকে প্রমাণ উপস্থাপনের প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয় তবে তারা এ ক্ষেত্রে ‘কোরআন ও আহলে বাইতকে আঁকড়ে ধরার নির্দেশ সম্পর্কিত হাদীসসমূহ (যা হাদীসে সাকালাইন নামে প্রসিদ্ধ) এবং যে সকল হাদীসে রাসূলের (সা.) বাণীর বর্ণিত হওয়ার (প্রকৃতই তা রাসূল সা. থেকে বর্ণিত হয়েছে কি-না তার) সত্যতা ও সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য ঐ বাণীকে কোরআনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে বলা হয়েছে সেগুলোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।২১ ইমামীয়া আলেম ও মনীষীরা দু’টি লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য এই হাদীসগুলো থেকে প্রমাণ উপস্থাপন করেছেনঃ

প্রথমতঃ কোরআনের অবিকৃত থাকার বিষয়টি প্রমাণ

দ্বিতীয়তঃ বাহ্যিকভাবে যে সকল হাদীস থেকে কোরআনে বিকৃতি ঘটেছে প্রতীয়মান হয় তা প্রত্যাখ্যান ও খণ্ডন (যদি তা ভিন্নরূপ ব্যাখ্যার অবকাশ না থাকে)। কেননা যে ক্ষেত্রে হাদীসসমূহের বর্ণনার ক্ষেত্রে বৈপরীত্য পরিলক্ষিত হয় সে ক্ষেত্রে যে সকল হাদীস সনদ বা সূত্রের (বর্ণনাকারীদের বিশ্বস্ততার বিষয়টি প্রমাণিত না হওয়ায়) দিক থেকে দুর্বল এবং তার বিষয়বস্তু অস্পষ্ট অথবা কোরআনের বিরোধী তা অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং ঐ বর্ণনাসমূহ বাহ্যিকভাবে বিকৃতি নির্দেশক বলে গণ্য হবে।

সাকালাইনের হাদীস শিয়া-সুন্নি উভয় সূত্রে মুতাওয়াতির সূত্রে (বর্ণনাসূত্রের আধিক্যের দিক থেকে এতটা প্রসিদ্ধ যে হাদীসটি রাসুল হতে বর্ণিত হওয়ার বিষয়টি একশ’ভাগ প্রমাণিত বলে গণ্য হওয়ার যোগ্য) বর্ণিত হয়েছে।২২ কোরআনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার নির্দেশ সংক্রান্ত হাদীসও মহানবী (সা.) ও পবিত্র ইমামদের নিকট থেকে বহুল সূত্রে বর্ণিত (মুতাওয়াতির) হয়েছে। এই হাদীসগুলির একাংশে বৈপরীত্যের সমস্যার সমাধানের জন্য তা করতে বলা হয়েছে আবার কোন কোনটিতে সার্বিকভাবে (শর্তহীনভাবে) সকল হাদীস ও মতকে কোরআনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং যদি কোরআনের বিষয়বস্তু ও নির্দেশের বিপরীত কিছু হয় তবে তা প্রত্যাখ্যান করতে হবে।২৩ এই হাদীসগুলির বাণীতে সরাসরি ও স্পষ্টভাবে কোরআনকে সবকিছুর জন্য শর্তহীন মানদণ্ড ঘোষণা করেছে যা থেকে নিশ্চিতভাবে বোঝা যায় কোরআনের বাণী নির্ভুলভাবে বহুল সূত্রে বর্ণিত এবং তা অপরিবর্তিত ও অবিকৃত রয়েছে।২৪ যদিও এ হাদীসসমূহ কোরআনের অবিকৃত থাকার সপক্ষে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ তদুপরি আহলে সুন্নাতের আলেমদের পক্ষ থেকে এগুলোর বিরুদ্ধে যুক্তি ও আপত্তি উত্থাপিত হয়েছে। এমনকি তাদের কেউ কেউ এ হাদীসগুলিকে অবিশ্বাসী ও অস্বীকারকারী দলসমূহের (زنديق) রচিত বলে সমালোচনা করেছেন।২৫

ঘ. বুদ্ধিবৃত্তিক প্রমাণ: বুদ্ধিকৃত্তিকভাবেও কোরআন অবিকৃত থাকার বিষয়টি প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে২৬ যদিও মুফাসসিরদের নিকট তা তেমন গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেনি।

বাহ্যিকভাবে বিকৃতি নির্দেশক হাদীসসমূহের সমাধানে তুলনামূলক পর্যালোচনা

কোরআন বিকৃতির অমূলক ধারণাটির মূল কিছু হাদীসে নিহিত। এ হাদীসগুলির বাহ্যিক অর্থ থেকে বোঝা যায় কোরআনে বিকৃতি ঘটেছে এবং উভয় মাজহাবের উৎসসমূহে এরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

এই হাদীসগুলির বিশ্লেষণ ও সমালোচনার পদ্ধতিতে উভয় মাজহাবের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান। এই পার্থক্যের ভিত্তিতে কমপক্ষে দু’টি দৃষ্টিকোণ থেকে তা পর্যালোচনার দাবি রাখে:

প্রথমতঃ আপত্তিসমূহের জবাবকে সঠিকভাবে অনুধাবন এবং এই হাদীসসমূহের পর্যালোচনা ও সমালোচনার ক্ষেত্রে উভয় মাজহাবের দৃষ্টিভঙ্গী।

দ্বিতীয়তঃ এ দুই মাজহাবের মনীষীরা বিশ্লেষণ ও সমালোচনার ক্ষেত্রে বিপরীত মাজহাবের ওপর যা আরোপ করেছেন তার সঠিকতা যাচাই।

এই পার্থক্যের উৎস হল কোরআনের আয়াত সংখ্যাগত ও পরিমাণের ক্ষেত্রে কতটা হ্রাস পেয়েছে সেক্ষেত্রে মত পার্থক্য এবং বিকৃতি নির্দেশক হাদীসগুলির বিষয়বস্তু ও বর্ণনাগত বৈচিত্র।

এই দুইটি পার্থক্যের সাথে বিকৃতি নির্দেশক হাদীসসমূহের বর্ণনাধারা ও সূত্রসমূহের মূল্যায়ন ও পর্যালোচনার ক্ষেত্রে উভয় মাজহাবের দৃষ্টিভঙ্গীর পার্থক্যও পর্যালোচনার জন্য গবেষকদের দৃষ্টিতে থাকা বাঞ্ছনীয়।

 

তথ্যসূত্র

১. মুস্তাফাভী, হাসান, আত তাহকীক ফি কালিমাতিল কুরআন। ح ر ف  শব্দমূল, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৯৭।

২. বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন আল খুয়ী, আবুল কাসেম, আল বায়ান, পৃ. ২২৯।

৩. ইবনে ফারিস, আহমাদ, মো’জামু মাকায়িসুল লোগাত, ‘ق ر ي’ শব্দমূল, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৭৮, আযযাভী, তাহির, তারতীবুল কমুসিলমুহিত, ق ر ي’ শব্দমুল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৫৭৮, আনিস, ইব্রাহিম ও আব্দুল হালিম মুনতাসির, আল মো’জামূল ওয়াসিত, ق ر ي  শব্দমূল, পৃ. ৭২২।

৪. আসকারী, সাইয়্যেদ মুর্তাজা, আল কোরআনুল কারিম ওয়া রেওয়াইয়াতুল মাদরাসাতাইন, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৯১। এ গ্রন্থের লেখক পর্যাপ্ত দলিল-প্রমাণসহ ওহী অবতীর্ণের যুগে এবং এর পরবর্তী সময়ে ‘ইকরা’ শব্দের প্রচলিত পারিভাষিক অর্থ নিয়ে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করেছেন।

৫. আনিস, ইবরাহিম, প্রাগুক্ত, (ن ز ل) শব্দমূল, পৃ. ৯১৪।

৬. আল খুয়ী, আবুল কাসেম, আল বাইয়ান ফি তাফসীরিল কুরআন, পৃ. ২৪৪।

৭. আনিস, ইব্রাহিম এবং আব্দুল হালিম মুনতাসির, আলওয়াসিত, ن س خ শব্দমূল।

৮. যেমন: ইবনে সাল্লাম, কাসেম (মৃত্যু ২২৪ হিঃ), ফাজায়িলুল কোরআন, পৃ. ১৯০।

৯. এ ধরনের বিকৃতি বলতে কোনরূপ স্বীকৃত ও বিধিবদ্ধ রীতি ছাড়াই কোরআনকে ব্যাখ্যা ও তাফসীর করা বোঝানো হয়েছে। একে তার মনগড়া তাফসীর নামকরণ করে থাকেন। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।

১০. নাহজুল বালাগা, খুতবা ১৭ এবং কুলাইনী, মুহাম্মদ, আল কাফী, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৫১।

১১. সূরা নিসা ৪৬, সূরা বাকারা ৭৫।

১২. ইজতিহাদী তাফসীর হাদীস ভিত্তিক (বর্ণনা ভিত্তিক) তাফসীরের বিপরীতে কোরআন ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে এবং এর বাণী অনুধাবনে বিভিন্ন জ্ঞানের সাহায্য নেয়া হয়। এর ভিত্তিতে ইজতিহাদী তাফসীরকে ফিকাহগত, বিজ্ঞানভিত্তিক, আধ্যাত্মিক প্রবণতা বিশিষ্ট ইত্যাদি বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়। বর্ণনা বা হাদীসভিত্তিক তাফসীরে কোরআনের আয়াত ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র হাদীস ও অন্যান্য (সাহাবা ও তাবেয়ীদের) বর্ণনার উপর নির্ভর করা হয়।

১৩. উদাহরণ স্বরূপ শিয়া মুফাসসির ও মনীষীদের মধ্যে মুহাম্মদ তুসী, আত তিবইয়ান ফি তাফসীরিল কুরআন, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩২০, তাবারসী, ফাজল, মাজমাউল বাইয়ান ফি উলুমিল কুরআন, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৫০৯, জাওয়ামেউল জামে, পৃ. ২৩৬, রাজী, আবুল ফুতুহ, রাউজুল জানান ওয়া রাওহুল জানান ফি তাফসীরিল কুরআন, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩১, হিল্লী, ইবনে ইদরিস, আল মুনতাখাব ফি তাফসীরিল কুরআন, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৪৬, কাশেফী, কামালুদ্দীন, আল মাওয়াহেবুল আলীয়া, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৩৬, শাইবানী, মুহাম্মদ, নাহজুল বায়ান আন কাশফী, মায়ানিল কুরআন, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১৮৪, কাশানী, মোল্লা ফাতহুল্লাহ, মিনহাজুস সাদেকীন, ৫ম খণ্ড, পৃ. ১৫৪, নাহাভান্দী, নাফাহাতুর রাহমান, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৪, তাবাতাবায়ী, মুহাম্মদ হোসাইন, আল মিজান ফি তাফসীরিল কুরআন, ১২তম খণ্ড, পৃ. ১০৪, খুয়ী, আবুল কাসেম, আল বায়ান ফি তাফসীরিল কুরআন, পৃ. ২০৭ এবং আহলে সুন্নাতের মুফাসসিরদের মধ্যে রাজী, ফাখরুদ্দীন, আত তাফসীরিল কাবির, ১৯তম খণ্ড, পৃ. ১৬০, কুরতুবী, মুহাম্মদ, জামেউ আহকামিল কুরআন, ১০ম খণ্ড, পৃ. ৬৫, নাসাফী, আব্দুল্লাহ ইবনে আহমাদ, মাদারেকুত তাভীল, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৭৯, ইবনে কাসির, ইসমাইল, তাফসীরুল কুরআনিল আজীম, ২য় খণ্ড, পৃ. ৫৯২, বাগাভী, হুসাইন, মায়ালিমুত তানযীল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৪৪, বাইদ্বাভী, আব্দুলাহ, আনওয়ারুত তানযীল ওয়া আসরারুত তাভীল, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫২৮, জামাখসারী, মাহমুদ, আল কাশশাফ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৫৭২, আলুসী, মাহমুদ, রুহুল মায়ানী, ১৪তম খণ্ড, পৃ. ১৬।

১৪. চক্রক প্রমাণ বলতে এমন প্রমাণ বুঝানো হয় যাতে প্রামাণ্য বিষয়টি প্রমাণ করতে প্রামাণ্য সিদ্ধান্তকেই প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এখানে আলোচ্য আয়াতটি কোরআনের অংশ কি অংশ নয় তা প্রমাণ হওয়ার পূর্বেই এই আয়াতে বর্ণিত অবিকৃতির দলিল কোরআন অবিকৃত থাকার সপক্ষে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে।

১৫. রাজী, ফখরুদ্দীন, আত তাফসীরুল কাবীর, ১৯তম খণ্ড, পৃ. ১৬১।

১৬. প্রাগুক্ত, পৃ. ১৬০।

১৭. নূরী, মির্জা হুসেইন, ফাসলুল খিতাব, পৃ. ৩৬০-৩৬২।

১৮. উদাহরণ স্বরূপ, ফাতহুল্লাহ মুহাম্মদী নাজ্জারজাদেগণ রচিত ‘সালামাতুল কোরআন মিনাত তাহরীফ’ গ্রন্থের ‘কিতাবু ফাসলিল খিতাব ওয়া নুকাতুন মুহিম্মা’ অধ্যায় দ্রষ্টব্য, পৃ. ৯৩-১৩৪।

১৯. উদাহরণস্বরূপ, সাইয়্যেদ আলী শারিফ মুরতাজা আলামুল হুদা, আয যাখিরাতু ফি ইলমিল কালাম, পৃ. ৩৬১-৩৬৪, তাবারসী, ফাজল, মাজমাউল বায়ান, ১ম খণ্ড, পৃ. ৮৩, নাহাভান্দী, নাফাতুর রাহমান ফি তাফসীরিল কুরআন ওয়া তাবইনীল ফুরকান, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৫, খুয়ী, আবুল কাসেম, আল বায়ান ফি তাফসীরিল কুরআন, পৃ. ১২৩-১২৪, রাজী, ফখরুদ্দীন, মাফাতিহুল গাইব, ১৯তম খণ্ড, পৃ. ১৬০, আলুসী, মাহমুদ, রুহুল মায়ানী, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪৫।

২০. এ হাদীসসমূহ প্রধান পাঁচটি ভাগে বিভক্ত যার প্রতিটি ভাগে অগণিত হাদীস বিদ্যমান। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে দেখুন, মুহাম্মাদী নাজ্জারজাদেগণ, ফাতহুল্লাহ, সালামাতুল কুরআন মিনাত তাহরীফ, পৃ. ২৭-৩৪।

২১. উদাহরণস্বরূপ দেখুন, ইবনে বাবুইয়া, মুহাম্মদ (শেখ সাদুক), আল ইতিক্বাদাত, পৃ. ১০৩, তুসী, মুহাম্মাদ, আত তিবইয়ান ফি তাফসীরিল কুরআন, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩ ও ৪, হাসানী, কাওয়ামুজীন, তাফসীরুল বালাবিল ওয়াল কালাকিল, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৪৪, ২৫৮, সাদরুদ্দীন শিরাজী, মুহাম্মাদ (সাদরুল মুতাআলে-হীন), শারহু উসুলিল কাফী, পৃ. ১৯৯, ২০২,২০৫, খুয়ী, আবুল কাসেম, আল বায়ান ফি তাফসীরিল কুরআন, পৃ. ১২২ এবং অন্যান্য।

২২. শীঘ্রই আমরা ‘কোরআনের তাফসীরের ক্ষেত্রে রাসুলের (সা.) আহলে বাইতের বাণীসমূহের নির্ভরযোগ্যতার প্রমাণ’ সংক্রান্ত আলোচনায় হাদীসে সাকালাইনের সূত্র ও উৎসসমূহের বিবরণসহ বিশ্লেষণ করব।

হাদীসে সাকালাইনের বিষয়বস্তু ও বাণী থেকে কোরআনের অবিকৃত থাকা ও বিশুদ্ধতার প্রমাণ সম্পর্কে জানতে আলখুয়ী, আবুল কাসিম, আলবাইয়ান ফি তাফসীরিল কুরআন, পৃ.২১১-২১৪ দ্রষ্টব্য।

২৩. উদাহরণস্বরূপ দেখুন, হুররে আমেলী, মুহাম্মদ, ওসায়িলুশ শিয়া, ২৭তম খণ্ড, নবম {বিচারক (কাজী)} অধ্যায়, পৃ.৮৬-৯১, হাদীস নং ২৯, ৪০, ৪১, ও ৪২, কুলাইনী, মুহাম্মদ, আলকাফী, ১ম খণ্ড,পৃ.৬৯, হাদীস নং ৩, ৪, ৫, আফশী, মুহাম্মদ, কিতাবুত তাফসীর, ১ম খণ্ড, পৃ. ৮ ও ৯, তুসী, মুহাম্মদ, আল আমালী, ১ম খণ্ড, পৃ.২৩৬।

২৪. বিস্তারিত জানতে দেখুন, মুহাম্মদী, ফাতহুল্লাহ, সালামাতুল কোরআন মিনাত তাহরীফ, পৃ. ৪৭-৫৩।

২৫. যেমন, রেজাল শাস্ত্রবিদ ইয়াহিয়া ইবনে মুঈন থেকে মুহাম্মদ কুরতুবী তার আল জামে লি আহকামিল কুরআন গ্রন্থের ১ম খণ্ডের ৩৮ পৃ.য় বর্ণনা করেছেন, অনুরূপ ইবনে আব্দুল বার, ইউসুফ, জামেউ বায়ানিল ইলম ওয়া ফাজলিহী, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৩৩ (আব্দুর রহমান ইবনে মাহদী সূত্রে), বাইহাকী, আহমাদ, দালায়িলুন নুবুয়াত, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৬।

২৬. জাওয়াদী আমুলী, আব্দুল্লাহ, রিসালাতু নিজাহাতুল কুরআন আনিত তাহরীফ, আলখুয়ী, আবুল কাসিম, আল বায়ান ফি তাফসীরিল কুরআন, পৃ. ৩৭, নাহাভান্দী, নাফাহাতুর রাহমান, ১ম খণ্ড, পৃ.১১। (সূত্র:আল-বাসাইর)