কোরআন মজীদ কি অনাদি, নাকি সৃষ্ট?
  • শিরোনাম: কোরআন মজীদ কি অনাদি, নাকি সৃষ্ট?
  • লেখক: নুর হোসেন মজিদী
  • উৎস:
  • মুক্তির তারিখ: 14:55:31 3-9-1403

কোরআন মজীদ হচ্ছে মানুষের জন্য আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে প্রেরিত পথনির্দেশ; এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু ইসলামের প্রথম যুগের বেশ পরে তৎকালীন আলেমদের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে : কোরআন কি অনাদি, নাকি সৃষ্ট? তৎকালীন আলেমদের মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গির গোঁড়ামি ও চরম পন্থার কারণে এ প্রশ্নটিকে তাঁরা ঈমানদার ও কাফের নির্ণয়ের মানদণ্ড হিসেবে গ্রহণ করেন। ফলে, তাওহীদ, আখেরাত, নবুওয়াতে মুহাম্মাদী (ছ্বাঃ), খাতমে নবুওয়াত্ এবং কোরআন মজীদের আল্লাহ্ তা‘আলার পূর্ণাঙ্গ, সর্বশেষ ও সংরক্ষিত কিতাব হবার ব্যাপারে অভিন্ন ঈমানের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও ঐ প্রশ্নটির ভিত্তিতে একদল আরেক দলকে কাফের হিসেবে অভিহিত করেন। তৎকালীন স্বৈরাচারী ‘আব্বাসী শাসকরা এ ব্যাপারে একেক সময় একেক দলকে সমর্থন দিয়ে স্বীয় রাজনৈতিক স্বার্থ হাছ্বীলের অপচেষ্টা চালায়। এ প্রশ্নটি যখন ওঠে তখন এখতিয়ারবাদী মু‘তাযিলী আলেমগণ কোরআন মজীদকে সৃষ্ট বলে দাবী করেন এবং অদৃষ্টবাদী (জাবারী) আলেমগণ কোরআনকে অনাদি বলে দাবী করেন। এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে কাফের ও মুরতাদ এবং হত্যাযোগ্য বলে ফতওয়া দেয়, আর এর ভিত্তিতে ‘আব্বাসী শাসকরা বহু আলেমকে হত্যা করে। পরবর্তীকালে অবশ্য এ বিষয়টি আর ব্যাপক আলোচ্য বিষয় হিসেবে থাকে নি। তবে শিয়া-সুন্নী নির্বিশেষে মুসলমানদের মধ্যে মোটামুটিভাবে এ ধারণা বিরাজ করে যে, যেহেতু আল্লাহ্ তা‘আলা ছাড়া আর কোনো কিছুই অনাদি নয়, সুতরাং কোরআন মজীদও অনাদি নয়, তথা আল্লাহ্ কর্তৃক সৃষ্ট। কিন্তু পরবর্তীকালে ইবনে তাইমীয়াহ্ ও ‘আবদুল ওয়াহ্হাব্ নজদীর মাধ্যমে ইসলামে যে গোঁড়া ইফরাত্বী ধারা গড়ে ওঠে তারা এ বিষয়টিকে নতুন করে গুরুত্ব প্রদান করে এবং যারা কোরআনকে অনাদি বলে স্বীকার করে না তাদেরকে কাফের বলে অভিহিত করে, যদিও ওপরে মুসলমানদের মধ্যকার যে অভিন্ন বিষয়গুলোর উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোর মোকাবিলায় এ প্রশ্নটি নেহায়েতই একটি গৌণ বিষয়। আর বলা বাহুল্য যে, গৌণ ও বিতর্কিত কোনো বিষয়ের ভিত্তিতে কাউকে কাফের বলে গণ্য করা যেতে পারে না। এখানে সংক্ষেপে হলেও উল্লেখ করা যরূরী যে, ইসলামী ‘আক্বাএদের প্রথম মূলনীতি হচ্ছে তাওহীদ। আর ‘আক্বল্ ও কোরআন মজীদের দৃষ্টিতে তাওহীদী ‘আক্বীদাহ্ হচ্ছে এই যে, এ জীবন ও জগতের পিছনে নিহিত মহাসত্য হচ্ছেন অনাদি ও অনন্ত ওয়াজেবুল্ ওজূদ (অপরিহার্য সত্তা) আল্লাহ্ তা‘আলা - যিনি অবিভাজ্য অবস্তুগত সত্তা - যার সত্তা ও গুণাবলী অভিন্ন এবং তিনি যে কোনোরূপ হ্রাস-বৃদ্ধির উর্ধে; তিনি ছাড়া আর কোনো অনাদি ওয়াজেবুল ওজূদ নেই। বস্তুতঃ তিনি ছাড়া অস্তিত্বলোকে আর যা কিছুই আছে তার সবই তাঁর সৃষ্টি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষের উদ্দেশে নাযিলকৃত আল্লাহর কালাম কোরআন মজীদ কি তাঁরই মতো অনাদি, নাকি তাঁর সৃষ্ট। এ পর্যায়ে আমাদেরকে কোরআন মজীদের স্বরূপের প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে। কোরআন মজীদ আল্লাহর কালাম। আমরা যেভাবে আমাদের মুখ দিয়ে বাতাসে শব্দতরঙ্গ তৈরী করে কথা বলি এবং তার মাধ্যমে নিজেদের মনোভাব অন্যদের কাছে পৌঁছাই আল্লাহর কালাম সে ধরনের নয়। তিনি সমস্ত রকমের সীমাবদ্ধতা ও অপূর্ণতার উর্ধে, ফলে তিনি শরীরী হওয়ার মুখাপেক্ষিতা থেকে মুক্ত। তাই তিনি মুখ দিয়ে কথা বলার মুখাপেক্ষিতার উর্ধে। বরং তিনি যখন কাউকে কোনো কিছু জানাতে ইচ্ছা করেন তখন তিনি শুধু তা ইচ্ছা করেন এবং তাঁর ইচ্ছা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অন্তঃকরণে ভাব হয়ে এবং/অথবা তার কর্ণে ভাষার আবরণে কথা হয়ে প্রতিফলিত হয়। কোরআন মজীদ সেভাবেই নবী করীম (ছ্বাঃ)-এর কাছে নাযিল হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কোরআন মজীদ নবী করীম (ছ্বাঃ)-এর অন্তঃকরণে নাযিল হওয়ার আগে এর অস্তিত্ব ছিলো কিনা এবং থাকলে তা কখন থেকে ছিলো এবং তার স্বরূপ কেমন ছিলো। কোরআন মজীদ লাওহে মাহ্ফূযে থাকার কথা স্বয়ং কোরআন মজীদেই উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু লাওহে মাহ্ফূযের পরিচয় সুস্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করা হয় নি। ফলে লাওহে মাহ্ফূযের স্বরূপ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে ধরে নিয়েছেন যে, লাওহে মাহ্ফূয হচ্ছে মহাকাশে বা কোনো দূর নক্ষত্রলোকে অবস্থিত কোনো বস্তুনির্মিত ফলক, আবার কেউ কেউ মনে করেন যে, হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ)-এর অন্তঃকরণই হচ্ছে লাওহে মাহ্ফূয। হৃদয় বা অন্তঃকরণকে ‘পট’ বা ‘ফলক’ নামে অভিহিত করার রেওয়াজ অনেক ভাষায়ই রয়েছে। বাংলা ভাষায় আমরা ‘হৃদয়পট’ কথাটি ব্যবহার করে থাকি। তেমনি ফার্সী ভাষায় ‘লাওহ্’ শব্দটি ‘অন্তঃকরণ’ অর্থে ব্যবহার করা হয়; ‘সরলমনা’ লোকদেরকে বলা হয় ‘সদে লাওহ্’ কোরআন মজীদ থেকে এ গ্রন্থের দুই ধরনের নাযিলের কথা জানা যায়; প্রথমতঃ লাইলাতুল্ ক্বাদরে পুরো কোরআন মজীদ ‘ইলমে হুযূরী আকারে নবী করীম (ছ্বাঃ)-এর হৃদয়পটে নাযিল হয় - যাতে জ্ঞানগত ভাব ছিলো, কিন্তু আমরা যে কোরআন পাঠ করি তদ্রূপ ভাষা ভিত্তিক বক্তব্য ছিলো না; পরে আল্লাহ্ তা‘আলার নির্দেশে জিবারঈলের সহায়তায় ভাষার আবরণে দীর্ঘ তেইশ বছরে তা নবী করীম (ছ্বাঃ)-এর অন্তঃকরণ থেকে লোকদের সামনে পর্যায়ক্রমে নাযিল হয়। (এ বিষয়ে আমার লেখা ‘কোরআনের পরিচয়’ গ্রন্থে অপেক্ষাকৃত বিস্তারিত আলোচনা করেছি) আর লাওহে মাহ্ফূয বলতে যদি নবী করীম (ছ্বাঃ)-এর হৃদয়পটকে বুঝানো না হয়ে থাকে, বরং তা যদি দূর মহাকাশের কোথাও সৃষ্ট কোনো বস্তুগত সৃষ্টি হয়ে থাকে তাতেও খুব একটা পার্থক্য হচ্ছে না, কারণ, সে ক্ষেত্রে কোরআনকে ‘ইলমে হুযূরী আকারে সেখান থেকে লাইলাতুল্ ক্বাদরে নবী করীম (ছ্বাঃ)এর হৃদয়পটে নাযিল করা হয়েছিলো। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, কোরআন মজীদের স্বরূপ কী? কোরআন মজীদ হচ্ছে একটি বাণী বা জ্ঞানগ্রন্থ। আর জ্ঞান বা বাণীর স্বরূপ হচ্ছে অবস্তুগত নাফ্স্-কে দেয় বস্তুগত ও অবস্তুগত বাস্তবতার অবস্তুগত রূপ (صور مجرد عن المادة و المجرد عند المجرد)। আর আমরা জানি যে, কোরআন মজীদে যেমন সরাসরি অনেক আদেশ-নিষেধ ও নৈতিক শিক্ষার কথা রয়েছে তেমনি তাতে একই উদ্দেশ্যে বহু ঘটনাবলীও বর্ণিত হয়েছে। নিঃসন্দেহে এ সব ঘটনার অবস্তুগত রূপ তা ঘটার সমসময়ে আল্লাহ্ তা‘আলার জ্ঞানে প্রতিফলিত হয় এবং পরে সেখান থেকে লাওহে মাহ্ফূযে ও তারপর লাওহে মাহ্ফূয থেকে লোকদের সামনে নাযিল হয়। এ থেকে সুস্পষ্ট যে, এতদসংক্রান্ত আয়াতগুলো অনাদি হতে পারে না, কারণ, অনাদি কালে এগুলোর অস্তিত্বই ছিলো না। হ্যা, যারা অদৃষ্টবাদে বিশ্বাসী তাদের মধ্যকার একটি ধারা মনে করে যে, সৃষ্টিলোকে যা কিছু ঘটেছে, ঘটছে ও ঘটবে তার সব কিছুই আল্লাহ্ তা‘আলা পূর্ব থেকেই (অনাদি কালে) নির্ধারিত করে রেখেছিলেন এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা-ই ঘটে আসছে। তাদের এ মত সঠিক হলে সৃষ্টির ইচ্ছা ও আমল বলে কিছু থাকে না। তাহলে বেহেশত-দোযখ ও দ্বীন-ধর্ম কোনো কিছুরই অর্থ হয় না। কারণ, যা তিনি নির্ধারিত করে রেখেছেন তা-ই ঘটবে; তার বিন্দুমাত্র ব্যত্যয় ঘটবে না। তাদের এ মত যে ভিত্তিহীন তা বিচারবুদ্ধির অধিকারী যে কারো কাছেই সুস্পষ্ট। যারা এ মতের প্রবক্তা তারা নিজেরাও স্বীয় আমলে এর বিপরীত বিষয়টিই অর্থাৎ মানুষের ইচ্ছা ও স্বাধীন কর্মশক্তি প্রদর্শন করে। (এ সব বিষযে আমি আমার গ্রন্থ ‘অদৃষ্টবাদ ও ইসলাম’-এ বিস্তারিত আলোচনা করেছি।) প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কোরআন মজীদে যে আবূ লাহাবের কুফরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা তো আল্লাহ্ তা‘আলা অনাদি কালেই নির্ধারণ করে রেখেছিলেন, তাই তার অন্যথা হওয়া অসম্ভব; তাহলে আল্লাহ্ আবূ লাহাবের দ্বারা কুফরী করিয়ে সে জন্য তাকে শাস্তি দেবেন? এ তো খুবই অন্যায়। (!!) না, আল্লাহ্ তা‘আলা অন্যায় করার মতো দুর্বলতার উর্ধে। যারা কোরআন মজীদকে অনাদি বলে দাবী করছে তা তাদের ভিত্তিহীন অন্ধ বিশ্বাস মাত্র যার সপক্ষে কোনো অকাট্য দলীল নেই। আল্লাহ্ তা‘আলা কোরআন মজীদে কোথাওই এ কথা বলেন নি। তেমনি লাওহে মাহ্ফূয বলতে যদি নবী করীম (ছ্বাঃ)-এর হৃদয়পট-কে বুঝানো হয়ে থাকে তো সুস্পষ্ট যে, তা অনাদি নয়, আর তা যদি অন্য কিছু হয়ে থাকে তো সে ক্ষেত্রেও তা আল্লাহ্ তা‘আলারই সৃষ্টি, কিন্তু কোরআন মজীদে বলা হয় নি যে, তা কখন সৃষ্টি করা হয়েছে এবং কখন কোরআন মজীদকে তাতে রাখা হয়েছিলো। ফলে তাকে অনাদি ধরে নেয়ার বিষয়টি নেহায়েতই একটি ভিত্তিহীন অন্ধ বিশ্বাস মাত্র। কোরআন মজীদ যে অনাদি নয় তা স্বয়ং কোরআন মজীদেরই বিভিন্ন আয়াত থেকে প্রমাণিত হয়। কোরআন মজীদ হিসেবে যা কিছু নাযিল হয়েছে তা থেকে কোনো কিছুই বিলুপ্ত হয় নি - এটা সন্দেহাতীত, তবে কোরআন নাযিল শুরু ও শেষ হওয়ার মাঝখানে চলমান ঘটনাবলী সংশ্লিষ্ট কতক বিষয়েও আয়াত নাযিল হয়েছে যা প্রমাণ করে যে, কোরআন নাযিল শুরু হওয়ার সময় তা কোরআনে ছিলো না, বরং আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে পরে তা যোগ করা হয়েছে। অর্থাৎ নাযিলকৃত কোরআন থেকে কোনো কিছু বিলুপ্ত করা হয় নি, তবে দীর্ঘ তেইশ বছরে কিছু বিষয় যোগ করে একে পূর্ণতা প্রদান করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন :

 يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لا تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ وَإِنْ تَسْأَلُوا عَنْهَا حِينَ يُنَزَّلُ الْقُرْآنُ تُبْدَ لَكُمْ عَفَا اللَّهُ عَنْهَا وَاللَّهُ غَفُورٌ حَلِيمٌ 

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা এমন বিষয়ে প্রশ্ন করো না যা তোমাদের সামনে প্রকাশিত হলে তোমাদের খারাপ লাগবে। আর কোরআন নাযিলের সময় [অর্থাৎ রাসূলের বেঁচে থাকাকালে] তোমরা যদি সে সম্পর্কে প্রশ্ন করো তাহলে তোমাদের সামনে তা প্রকাশ করে দেয়া হবে। অথচ আল্লাহ্ তো তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, আর তিনি ক্ষমাশীল ও নমনীয়তা প্রদর্শনকারী।” (সূরাহ্ আল্-মাএদাহ্ : ১০১)

এখানে সুস্পষ্ট যে, লোকেরা প্রশ্ন করলে কোরআন মজীদে এমন আরো কতক আয়াত নাযিল হতো যা তার আগে কোরআন মজীদে ছিলো না। অবশ্য নবী করীম (ছ্বাঃ)-এর ওফাতের কিছুদিন আগে যখন আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে দ্বীনকে পূর্ণ করে দেয়ার কথা ঘোষণা করা হয় (সূরাহ্ আল্-মাএদাহ্ : ৩) তার পর আর এতে কিছু যোগ করা হয় নি। বস্তুতঃ কোরআন মজীদকে আল্লাহ্ তা‘আলার ন্যায় অনাদি মনে করার মানে হচ্ছে এ গ্রন্থকে তাঁরই মতো ওয়াজেবুল ওজূদ মনে করা - যা তাওহীদী ‘আক্বীদাহর সাথে সাংঘর্ষিক। কোরআন মজীদ হচ্ছে ধরণীর বুকে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য মানুষের উদ্দেশে নাযিলকৃত পথনির্দেশ। সুতরাং, তর্কের খাতিরে আমরা যদি মেনে নেই যে, এটি নবী করীম (ছ্বাঃ)-এর হৃদয়পটে নাযিল হবার বহু আগে থেকেই অপরিবর্তিত রূপে বিরাজমান ছিলো. সে ক্ষেত্রেও আল্লাহ্ তা‘আলা মানুষ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কোরআনের অস্তিত্ব ছিলো বলে মনে করা যেতে পারে না। সুতরাং কোরআনকে অনাদি বলার কোনো উপায় নেই।